শীর্ষেন্দু দত্ত
ভোরের পাখি জানলায় এসে ডাকছে। বলছে, ওঠো। এতদিন রোজ আমি ওর আগে উঠতাম। বলার সুযোগ দিতাম না। আজ পঞ্চাশ দিন ধরে আমার আগে ও এসে পড়ছে জানালায়। আমি আর ওর আগে উঠছি না কারণ ঘুম ভাঙ্গছে না এমন নয়। ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে,কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠছিনা। বিছানাতেই গড়াগড়ি গড়িমসি করে চলেছি অনবরত। কারণ উঠলেই তো চলতে শুরু করে দেবে। আর চললেই তা আবার বৃত্তাকার পথে এসে গতকালকের মধ্যে প্রবেশ করবে।
এই পৃথিবীর গভীর অসুখ এখন। তাই জীবনকে থমকে রাখার এক অসম লড়াই চলছে দুনিয়া জুড়ে। গত পঞ্চাশ দিন ধরে লকডাউন চলছে দেশ জুড়ে। আরও কতদিন চলবে কেউ জানেনা। কোথাও বেরতে পারছি না,কারো সাথে দেখা বা কথা বলতে পারছি না। শুধুমাত্র ফোন ,ফেসবুক,হোয়াটসঅ্যাপ।
মানুষ ছাড়া আমি বাঁচতে পারিনা। এভাবে দিনের পর দিন ধরে মানুষের মুখ না দেখে সঙ্গ না পেয়ে বেঁচে থাকার নাম লকডাউন। গোটা শহরটা স্তব্ধ। বাস ট্রেন চলছে না। দোকানপাট,অফিস আদালত খুলছেনা। মানুষ রাস্তায় বেরচ্ছেনা। সর্বত্র একই মন্ত্র,স্টে হোম স্টে সেফ! কিন্তু আমি এমন সেফ থাকতে চাইনা। এভাবে বাঁচা যায়না। আবার এভাবে না থাকলেও নাকি মারণ রোগে আক্রান্ত হতে পারি। সারা পৃথিবী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে তটস্থ। অর্থাৎ কিনা যে দিকেই যাও মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। একদিকে শরীরী মৃত্যু,অপর দিকে
মানসিক মৃত্যু।
বন্ধুদের কথা মনে পড়ছে। বাড়ির ছাদে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে একসাথে ঘুড়ি ওড়ানো। বক্সে গান,চিকেন কারি আর ভাত,সাথে শস্তার মদ। আবার কবে সেসব করতে পারব?
দমদম স্টেশনের অটো লাইন। সামনে আইটির সেই মেয়েটা। যার কাঁধে হালকা বাদামী লোম,শরীর জুড়ে কমলালেবুর গন্ধ। লাস্ট পঞ্চাশ দিন সেই গন্ধ আমি পাইনি। শ্যামবাজারে কেষ্টোদার চায়ের দোকানের স্যাকারিন মারা চা। মিনিকাট সিগারেট খেতে খেতে পাড়ার পিকনিকের মেনু ঠিক করা। এসব কিছু আমাকে যন্ত্রণাবিদ্ধ করছে ঘুম থেকে উঠে দৌড়ে ছাদে। সামনের ছাদের নতুন বৌটা অলস হাতে ব্রাশ করছে। ফেনা গড়িয়ে পড়ছে কষ বেয়ে নাইটির ফাঁক গলে গভীর এক গণ্ডগ্রামে! কিন্তু রুটিন সব ওলোটপালোট! বউটি এখন ছাদে ওঠেনা। তাই আমারো আর ওঠার তাড়া থাকেনা। পাখিটা তাই বিরক্ত হয়ে চলে আসে আমার জানালায়। পাখিটা জানতে চায়,’তোমারো কি করোনা হয়েছে’? বলি,’না,তবে হলে বেঁচে যেতাম’। পাখি বলে,’বালাই ষাট,অমন কথা বলতে নেই’।
আমার মনে হচ্ছে আমাকে গলায় দড়ি দিয়ে কেউ ফাঁসি দিয়েছে। আমি গত পঞ্চাশ দিন ধরে ফাসিতে লটকে ঝুলছি কিন্তু প্রাণ বেরচ্ছে না! হাত ছুঁড়ছি, পা ছুড়ঁছি,কষ বেয়ে রক্ত নামছে,ঘাড় ভেঙ্গে ঝুলে গেছে,কিন্তু তবু আমার প্রাণ বেরচ্ছে না! আমি বেঁচে আছি,জীবিত আছি। স্টে হ্যাং,স্টে সেফ।
আমার হাত পা ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। মনে হচ্ছে বলি,দোহাই মোদি জেঠু,দোহাই অমিত কাকু,এই নাক মলছি কান মলছি,বিশ্বাস করো পরের যে ভোট আসছে তাতে তোমাদেরি ভোট দেবো,এই লকডাউনের কিছু করো প্লিজ,বিশ্বাস করো আমি স্বেচ্ছায় বর্ডার পেরিয়ে অন্য দেশে চলে যাব,এনআরসি বা সিএএ করতে হবেনা কষ্ট করে,আর কোনোদিন আজাদির স্লোগান দেবোনা,কানহাইয়া কুমারের ইউটিউব ভাষণে কখনো লাইক দেবোনা,অরুন্ধুতি রায় পড়বো না,বব ডিলান পিট সিগার শুনবো না,তোমরা যা বলবে তাই করবো,কিন্তু আমাকে জনঅরণ্যে ফিরে যেতে দাও,আমাকে লাস্ট লোকালে মাল খেয়ে ভেন্ডারে বাড়ি ফিরতে দাও। আর যদি না দাও,তাহলে?
তাহলে আমি ফ্যাতাড়ু হয়ে আকাশে উড়ে যাব। বইমেলার মাঠের উপর ক্রমাগত চক্কর খাব ড্রোনের মতো। লেকিন অপারেটিং বিধাননগর থানার ওসির হাতে থাকবে না। রোদ্দুর রায় অপারেট করবে আমার সেই ড্রোন।
কে বড় হারামী? যে রবীন্দ্রসঙ্গীতে বাঁড়া ঢুকিয়েছিল? সে? নাকি অরুণিমাদেবী? যার ছেলে লন্ডন থেকে প্রথম করোনা সাপ্লাই করল।
এসব প্রশ্ন করোনা,বোবা কালা হয়ে থাকো। হাত ধোও শুধু স্যানিটাইজারে,মরাল সাপোর্ট দাও শুধু পুলিশের লাঠিতে।
আর মাত্র তিন পেগ হুইস্কি রাখা আছে স্টকে। আজ খেলেই কাল। অগত্যা থলি হাতে বেরিয়ে পড়লাম। মুখে মাস্ক। পকেটে একটা ঢপের প্রেসক্রিপশন। ফাঁকা রাস্তা দিয়ে হেঁটে চললাম। জনমানবহীন একটা মৃত নগরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে চলেছি আমি এক বাঞ্চোত।
আমি মদের সন্ধানে চলেছি। একমাত্র মদই পারে এই সাইলেন্সার লাগানো সন্ধ্যেটা উতরে দিতে।
অলিগলি সাঁতরে ডোমপাড়ার ভিতরে সেঁধিয়ে পড়লাম। শুনশান গলিতে একজন কমরেড সন্তর্পণে আমার ব্যাগে একটা পাঁচশো এমএল রামের বোতল ঢুকিয়ে দিল। একশো টাকা বেশি।
গলি থেকে বেরনোর মুখে ছেলেরা ধরল। পঞ্চাশ টাকা দিতে হবে,ফুটপাথবাসীদের খিচুড়ি খাওয়ানো হবে। সেটা দিয়ে গলি থেকে বেরোলাম।
এখন আমার মনটা একটু ভাল। রাস্তায় বেরিয়েছি। থলেতে রাম। মনে হচ্ছে আরও কটা দিন বাড়তি বাঁচতে পারব। গলিতে কতগুলো দামড়া ছেলে মুখে মাস্ক লাগিয়ে ক্রিকেট খেলছে। সামনের বাড়ির দুটো বাচ্চা করুণ মুখে সেই খেলা দেখছে। ওদের নামতে দেওয়া হচ্ছেনা! একটা ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করছে। আমি একটা বড় দেখে পুঁই শাক কিনে ব্যাগে ভরে ফেললাম। পথে যদি পুলিশ ধরে মদের বোতলটা দেখতে পাবেনা। আর বাড়ি ফিরে রান্নাও হবে। একটা ডাগর মেয়ে স্কুটি চালিয়ে চলে গেল। চেনা লাগল,ডাকতে গিয়েও থমকে গেলাম। মুখে মাস্ক,মাথায় ওড়না জড়ানো। শুধুমাত্র বুকের সাইজ দেখে চেনা মুশকিল।
সন্ধ্যেবেলায় মদ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম,কখন খেয়াল নেই। আমি গঙ্গার উপর দিয়ে উড়ে চলেছি… গঙ্গায় একফোটা জল নেই! গঙ্গার ভাইরাস মারতে নাকি পুরো জল পাম্প করে বের করে দিয়েছে! শুকনো বালিতে বড় বড় লঞ্চ,স্টিমার,জেলে নৌকা কেতড়ে পড়ে আছে! সেই শুকনো নদীর উপর দিয়ে কতগুলো লোক চলেছে রামলালার বিগ্রহ নিয়ে! নাকি পূণস্থাপিত করা হবে! এদেরকে কোনো পুলিশ কিছু বলছেনা কেন? …
পাখির ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেল। বুঝলাম রামের ঘোরে স্বপ্ন দেখছিলাম।
বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। সামনের পিচঢালা রাস্তাটা খাঁ খাঁ শূন্য! কটা খুধার্ত কুকুর ছাড়া আর কিছু নেই। অথচ পঞ্চাশ দিন আগেও এই রাস্তা পেরোতে গেলে দাড়াতে হত! রাস্তার দুপাশের বাড়িগুলো প্রাণহীন ভাবে দাড়িয়ে আছে! কোথাও কোনো শব্দ নেই! মনে হচ্ছেনা বাড়িগুলোর ভিতর কোনো লোক আছে! দোকানপাটগুলোও বন্ধ। রাস্তার আলোগুলো এখনো জ্বলছে,কেউ নেবাতে আসেনি! একটা পাহাড়ী মেঘলা বিষন্নতা আমাকে ছেয়ে ফেলছে ক্রমশ! কাঁদতে ইচ্ছে করছে! এরকম বিকেল অবধি আমার চলবে। তারপর অন্ধকার নেমে এলে এই নৈশব্দকে আর দেখা যাবেনা। আমিও রাম নিয়ে বসে পড়ব। মাথা বেসুরো সুরে দুলবে। কিন্তু এভাবে কতদিন? কতদিন এই আন্ডারগ্রাউন্ড প্ররব চলবে?
অফিসে টিফিন আওয়ারে চা খেতে নেমে যে কুকুরটাকে বিস্কুট খাওয়াতাম সে কি আজো দুপুরে আমার জন্যে অপেক্ষা করে? শণিবার বিকেলে সোনাগাছির মুন্নি অন্য কাষ্টোমার ঢোকাতো না আমি আসব বলে! এখনো কি ও অপেক্ষা করে থাকে শণিবারগুলোয়?
কাল কোনোভাবে বেরিয়ে বোতলটা এনেছিলাম। আজ নাকি পাড়ার মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন হয়েছে! দুরের রাস্তায় দেখলাম একটা পুলিশের গাড়ি অলস ভাবে দাঁড়িয়ে আছে! স্ততর দশক নাকি এটা? এসব তো মৃণাল সেনের ফিলিমে দেখেছি!
সন্ধ্যে হতেই সবুজ-জলপাই-খাকি-সাদা-নীল পোশাক পরা মিলিটারি-আধা মিলিটারি-পুলিশ-হোমগার্ড-সিভিক পুলিশ-রেল পুলিশ-জল পুলিশ-বায়ুসেনা-রামসেনা-হনুমান সেনা-হার্মাদ-ক্যাডার-শত ঘোষ-সিদ্ধার্থ রায়ের ছেলেরা কুম্বিং অপারেশন শুরু করল গোটা শহরটা জুড়ে। গোল করে ওরা ঘিরে নিল পাড়াটা … আমি প্রথম পেগ মেরে বাদাম চিবানো শুরু করলাম। অন্ধকার ছাদে আমি একা। আম গাছে লক্ষ্মী পেঁচা উড়ে এসে বসল। ওদের কোয়ারেন্টাইন নেই! ওরা আজাদ।
বৃত্তটা ক্রমশ ছোট হচ্ছে। আমার তৃতীয় পেগ চলছে। স্কুলের বন্ধু নাড়ু ফোন করল। “ সব ঘিরে নিচ্ছে রে। ষাট বছরের উপর যাদের পাবেতাদের তুলে নিচ্ছে নাকি! পাশের পাড়াতেও পরশু দিন হয়েছে! তারপর থেকে তাদের আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি! মোবাইলের সুইচ বন্ধ বলছে।তাদের নিয়ে গেছে সেটাই পুলিশ বা প্রশাসন স্বীকার করছেনা।”
বললাম,”জানি।এখানে কুম্বিং শুরু হয়েছে।তবে চিন্তা করছিস কেনো?আমার তোর কারোর বয়স ষাট নয়।“
নাড়ু বলল,”বাবা খুব কাদছে রে”।
সত্তর দশকেও নাকি এমন কুম্বিং চলত। তখন বাড়িতে কোনো কমবয়েসি ছেলে থাকলে পুলিশ তুলে নিয়ে যেত। তাদের কাউকে কাউকে ময়দানে নিয়ে গুলি করে দিত। তখন তরুনদের হাপিশ করত আর এখন বুড়োদের! কারণ বুড়োদের নাকি রোগটা বেশি ধরছে! তাদের থেকে তাই ছড়াচ্ছে বেশি! বৃহত্তর স্বার্থে,জাতীয় স্বার্থে এসব বাতিল,অক্ষম মালেদের হাপিশ করতেই হবে। পুরনো প্লাস্টিকের কৌটোপাতি সব। স্ততর দশকেও বৃহত্তর স্বার্থে,জাতীয় স্বার্থে তরুন ছেলেদের হাপিশ করা হয়েছিল। যুবতীদের বুকে সিগারেটের ছেঁকা দেওয়া হয়েছিল জাতীয় স্বার্থে!
চতুর্থ পেগ শেষ। সিগারেটের জ্বলন্ত আগুনটা আমার বুকের ধকপকানীর সাথে তাল মিলিয়ে জ্বলছে নিবছে। কারণ, আমার বয়স ষাট না। আমার বাবা মাও অনেকদিন আগে উপরে চলে গেছেন। তাই আমার বাড়ি থেকে কাউকে তোলার নেই। নাড়ুর চাপ আছে। ওর বাবা রিটায়ার করেছে দুবছর হল। বাবার পেনসনের টাকায় নাড়ু বাংলা খেত। কাল থেকে কি খাবে জানিনা। মিল লকআউট হবার পর ও অটো চালাচ্ছিল। লকডাউনে তাও বন্ধ।
আজ অমাবস্যা।
সবুজ
জলপাই
খাকি
সাদা
নীল
পোশাক পরা
মিলিটারি
আধা মিলিটারি
পুলিশ
হোমগার্ড
সিভিক পুলিশ
রেল পুলিশ
জল পুলিশ
বায়ুসেনা
রামসেনা
হনুমান সেনা
হার্মাদ
ক্যাডার
শত ঘোষ
সিদ্ধার্থ রায়ের ছেলেরা-
বৃত গুটিয়ে আনছে পাড়ার মোড়ের লোকনাথ ব্রিদ্ধাবাসে। ওখানে শখানেক বুড়োবুড়ি থাকে। ভিতরে আলো নেবানো,গেটে কোলাপ্সিবলে ডবল তালা …
আবার চোখ ঢুলঢুলে। পঞ্চম পেগ শেষ। নীচ থেকে খেতে ডাকছে। এখন আমি খেয়ে শুয়ে পড়ব।
খেতে খেতে শুনতে পাচ্ছিলাম ব্রিদ্ধাবাসের করুণ আবেদন নিবেদন আর্তনাদ। আমার চোখ বুজে যাচ্ছে বা বুজে ফেলছি নেশায় অথবা লজ্জায়! আস্তে আস্তে শব্দগুলো কমে আসতে লাগল। সব শেষে পরপর কতগুলো গাড়ির স্টার্ট দেবার শব্দ। আমি খেতে পাচ্ছিনা। গলা বেয়ে খাবার টুকরোগুলো নামছে না! করোনার লক্ষণ এটা! আমি আমার গলা চেপে ধরে খাবার টেবিল ছেড়ে বেসিনের কাছে গিয়ে ওয়াক তুললাম। আমার স্ত্রী পিঠে হাত রেখে বলল,”শক্ত হু,আর ভয় নেই,সাস্পেক্টেড সকলকে প্রশাসন তুলে নিয়ে গেছে।“
আমি ক্রমশ ঝিমিয়ে যেতে থাকি
আমি ক্রমশ বিছানায় মিশে যেতে থাকি
আমি ক্রমশ ভেসে যেতে থাকি
আমি ক্রমশ একটা ভাইরাস হয়ে যেতে থাকি
শহরটা আজকাল খুব ঝকঝকে,দূষণ নেই,ধুলো নেই,রাস্তায় হরিণ,কাঠবিড়ালি চলে ফিরে বেড়াচ্ছে! গাছপালাগুলো যেখানে সেখানে যেমন খুশি বেড়ে চলেছে। কেউ কাটার নেই! কোনো বুড়োবুড়ি চোখে পড়েনা! সবাই ঝলমলে তরুন তরুনী। নির্জন পাড়ার মোড়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি। কোনো পুলিশ আমায় তাড়া করছে না! দেখেও না দেখার ভান করছে তারা! খেয়াল করলাম আমার হাত পা মাথা পেট বুক সব ধীরে ধীরে গুটিয়ে গোলাকৃতি হয়ে যাচ্ছে! গোটা শরীর থেকে অসংখ্য শূড় বেরাচ্ছে! আমি চিৎকার করে উঠতে চাইলাম। কিন্তু পারলাম না! আমি আস্তে আস্তে একটা ভাইরাসের মতো দেখতে হয়ে যাচ্ছি।