শিরীণ আক্তার

শ্যাওলা ধরা, পলেস্তরা খসা পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ির

ভেতর থেকে আজও যেন ভেসে আসে—

সেই করুণ আর্তনাদের ধ্বনি :

“দেব-দা গো”।

মনে পড়তেই গোপন দীর্ঘশ্বাসে নোনাজলে ভিজি।

আহা! দেবদাস! এমনও মরণ ছিল কপালে!

যাবার বেলা এক ফোঁটা জলও দেবার ছিল না কেউ।

হাতীপোতা জমিদার বাড়ির

অশ্বত্থতলা থেকে—

অচ্ছ্যুৎ, অর্ধদগ্ধ হয়ে নিক্ষিপ্ত হলো শুকনো পুকুরে।

কাক—শকুন, শেয়াল—কুকুরে ভাগিদার হলো;

শেষ দেখা হলো না শুধু পারুর!

এতোটা বছর এ কষ্ট নিয়েই জানলাম, “দেবদাস মুখুজ্যকে”!

দিয়া জ্বালিয়ে নিয়ত জ্বলছিল পারু

একবারও তো মনে এলো না তা!

নোনাজলে আজ ভিজি পারুর বিরহে।

 

সমস্ত অনুভূতি বিসর্জনের এই প্রতিমা

বেঁচে থেকেও যেন আত্মা বিসর্জিত জীবন্ত-লাশ।

দেহসর্বস্ব হয়ে দগ্ধ পোড়া হৃদয় নিয়ে—

ভালোবাসা আঁকড়ে বেঁচে থাকার মূর্ত প্রতীক।

 

এমন দেবদা আছে কী না জানি না,

তবে এমন পারু নিশ্চয়ই আছে।

কে রাখছে তাদের খোঁজ?

তারা তো কেবলই পারু বা পার্বতী!