উত্তম কুমার পুরকাইত

হতচ্ছাড়া কাকটা কা-কা চিৎকারে শান্ত দুপুরের সময়টাকে ছন্নছাড়া করে। তুষারের ঘুম ভাঙে। অতি কষ্টে উঠে বসে। ঝন-ঝন করে ডান হাঁটুর মালা। ব্যান্ডেজটার দিকে তাকিয়ে থাকে। সারা শরীরে তীব্র কনকনে স্রোত। ঘুমের মধ্যে যুথিকা এল। খিটখিট করে অস্থির করে তুলল, ওঠো ওঠো, কতদিন এভাবে শুয়ে থাকবে? খেলোয়াড়রা এভাবে  শুয়ে থাকে নাকি? ওরকম খোঁড়ার মতো দেখাচ্ছে কেল?  বিদ্রুপের হিশহিশ শব্দে বাতাসে ছোবল, লাগাটা মানো নাকি? পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে মাঠে নেমে পড়ো, কথা শোনো না। ওঠো, আমার কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটো।  তোমার কি মাথা খারাপ! একজন অনাত্মীয়া যুবতী মেয়ে…  যুথিকার চোখে স্ফুলিঙ্গ, ন্যাকা! লোকের সামনে ভদ্রতা! তিন মাস যুথিকা নেই। ঘরটা নীরব। কোন তর্ক নেই, ঝামেলা এড়ানোর উৎকণ্ঠা নেই, স্বপ্নটা ঠান্ডা বরফের মতো ছুঁয়ে থাকে সারাক্ষণ। বড় কষ্ট। গত তিনমাস যুথিকার না থাকাটা বড় পরীক্ষা হয়ে গেছে। জীবন যুদ্ধে ক্রমশ ভোঁতা হয়ে যাওয়ার পরীক্ষা।   যুথিকা ফুল। যাকে মুগ্ধ চোখে দেখা যায়। ছুঁতে গেলে ভয় করে। যুথিকাকে তার ভয়। কলেজ থেকে ছুটির পর দুজনে একসঙ্গে গাড়ি ধরা সত্ত্বেও। কলেজ গ্রাউন্ড যেদিন সিনিয়রদের নব্বই রানে হারাল, অনেকক্ষণ বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিল তুষার। গাড়ি আসতে দেরি করছিল। একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা যুথিকা হঠাৎ পাকড়াও করল, এত ভালো ক্রিকেট খেলো কীভাবে? তুষারও পাল্টা ছুঁড়ে দিয়েছিল, তুমি অত ভালো আবৃত্তি করো কীভাবে? তুমি তো বেশ। পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়ো। হতবিহ্বল তুষার তাকিয়ে ছিল। জুনিয়র একটা মেয়ে তাকে একেবারে তুমি দিয়ে শুরু করেছে। ও কি তুষারকে বাচ্চা ভাবে? না বোকা?  মেয়েটা দ্রুত পা চালিয়ে পাশে এল, প্রশ্ন করে কি ভুল করেছি?  তুষার চারপাশে তাকাল। অপরিচিত মানুষজন কৌতূহলে তাকিয়ে আছে। ভাবল, মেয়েটা বিপজ্জনক। যুথিকা হাসল। দারুন খেলো তুমি। শচীন স্টাইল, বাচ্চা-বাচ্চা, অথচ কী সাংঘাতিক অ্যাগ্রেশন। তুষার থতমত খেল। মেয়েটা বলল, অনেকক্ষণ দেখলাম তোমার খেলা। এবার থেকে হয়তো ফ্যান হয়ে যাব।  যুথিকা থামল। চোখে চোখ রাখল, মাঠের ভিতরে তুমি, আর মাঠের বাইরে তুমি একেবারে আলাদা। ট্যালেন্টের জাদুতে একটা শর্ট যে কী অসাধারণ হয়ে যায় কিংবা তুমি…! খেলে যাও। নিজেকে নষ্ট কোরো না। মেয়েটা তো বড্ড বকে। প্রতিভার অমর্যাদা করবে না। নির্ঘাত একদিন সবাই চিনবে। ছাপোষা ক্যারিয়ারিস্ট হওয়ার চেয়ে…   একটু থামবে! বিরক্ত হয় তুষার। পরক্ষণে মনটা কেমন করে। তার খেলা নিয়ে কেউ এমন বকবক করেনি কোনোদিন। মেয়েটার দিকে তাকায়। কাটকাট চেহারায় সে হাসে, অসাধারণদের কিন্তু বেঁচে থাকার বিড়ম্বনা। চেনা বৃত্ত থেকে সরে গেলে একা হওয়ার ভয়, নতুবা স্বার্থপর হওয়ার। পরক্ষণে ভাসা চোখে উপরের দিকে তাকায়, অবশ্য কে নয় স্বার্থপর? যে সবকিছু ত্যাগ করছে সেও কি পাওয়ার লোভে নয়? একটা হারিয়ে তো আর একটা পেতে চায় সবাই। একটু থামবে? জ্ঞানের কথা শুনতে আসিনি। চিৎকার করে যুথিকা। ফিলোজফি সহ্য হয় না। হঠাৎ চারদিকে সুনসান। দুজন দুজনের দিকে তাকায়। চারদিকের মানুষগুলোকে হতচকিত দেখে হো হো করে হেসে ফেলে দুজন। আমি একাই বকি, না?  তুষার হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। কী দেখছ ওভাবে? শোনো প্রথমেই বলি, সবাইকে আপনি বলতে আমার ধাতে বাধে বলে তোমাকে তুমি দিয়ে শুরু করেছি। এখন দেখছি  শুরু করলেই তুমি অন্য খাতে বও। চারপাশের মানুষ কিন্তু আমাদের স্টাডি করছে।  আহা, জড়তা যে কাটেনি। বেশ, বাস আসছে না যখন চলো হাঁটতে হাঁটতে অটোস্ট্যান্ড যাই। কথার তার ছিঁড়ে দুজনে হাঁটতে থাকে। উল্টোদিক থেকে বাসটা ততক্ষনে এসে পড়ে। যুথিকা অবাক করে দিয়ে ধীর, চলন্ত বাসটাতে উঠে পড়ে। বাম হাত দোলে, টা-টা, বাই-বাই।  উপর থেকে একটা টিকটিকি ঝপাট করে মেঝেতে পড়ে। তুষারের সম্বিত ফেরে। পায়ের দিকে তাকায়। যুথিকা থাকলে তাকে জড়িয়ে থাকত। কিছুতেই পালাতে পারত না।  একটা টগবগে শরীর কতদিন এভাবে অকর্মণ্য হয়ে পড়ে থাকবে? বিছানায় বসে বসে কতদিন খেলার হাইলাইট আর সিনেমা দেখে কাটাবে? ভয় হয়। নিজের দুই হাতের দিকে তাকায়। এই হাত দুটো তাকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছে। এই হাতেই তার ঈশ্বর। ক্রিকেট মাঠে যদি আর না নামতে পারে তার মরণ ভালো। পা’টা সোজা করে টেনে নামাতে যায় তুষার। পারে না। আ-আ করে দুমড়ে পড়ে। মল্লিকা ছুটে আসে ঘরে। ওকে ধরে, এত অস্থির কেন বলুন তো, কিছু একটা হলে?   তুষার হাসে। এই ভাড়াটে মেয়েটাকে কিছুতেই সে বুঝে উঠতে পারে না। তবু দাঁতে দাঁত পিষে কষ্ট করে বলে, আমার কিছু আর হওয়ার নেই। সব শেষ হয়ে গেছে।  জীবনে কিছুই শেষ হয় না। যতদিন বাঁচবেন, সামনে কিছু থাকবে। নয় আপনাকে তার কাছে পৌঁছতে হবে, নয় সে আপনার কাছে পৌঁছাবে। এটাই জীবনের মজা। মল্লিকা তাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে চলে যায়। তুষার ভ্যাল-ভ্যাল করে চেয়ে থাকে। যুথিকাকে বোঝা যেত, কিন্তু এই মেয়েটাকে সে বুঝতে পারে না। অথচ  দুজনেই ফুল। দুজনেই ভালোবাসার গন্ধে মাখামাখি। কলেজ পড়তে পড়তে  বছর উনিশের মেয়েটি  ব্যাংকের  চাকুরে। ঠাম্মার বান্ধবীর নাতনি। যাতায়াতের সুবিধার জন্য ঠাম্মাকে বলে এখানেই বাসা নিল। তবে ঠাম্মার একটা শর্ত ছিল, এখানে থাকতে দিতে পারি, ভাড়া দেওয়া যাবে না। কাছেই ছিল তুষার। ঠাম্মার কানে কানে বলেছিল, ভুল করছ ঠাম্মা, চাকুরেকে ছাড় দেওয়া উচিত নয়।  মুহূর্তে মোবাইল কাঁপিয়ে মল্লিকার ঠাম্মার বাঁধভাঙা হাসি, অন্য মতলব নেই তো তোর? বেকার নাতিকে আমার নাতনির সঙ্গে…  ঠাম্মার মুখখানা চুপসে গেল। তুষার মজাটা বুঝে নিয়ে চিৎকার করে বলল, কাউকে ছাড় দিলে আমি কিন্তু আমার মফস্বলের বন্ধুদের এনে তুলব। এখানে থেকে পড়াশোনা করলে তাদের সুবিধা। ওসব চাকরিওলাকে আমি ওয়াক করি। বলেই মেঝেতে থু করল। তার আগে মোবাইলটা কেটে দিয়েছিল ঠাম্মা। ভাগ্যিস শুনতে পায়নি ওপারের মহিলা। যুথিকা একদিন ফোন করল হঠাৎ। একেবারে সকালে। পুবের আকাশে তখন লালিমা। পাখিদের কণ্ঠস্বর বাতাসে। অত সকালে ঘুম ভাঙে না তুষারের। ঘুমের ঘোরে সে বিভ্রান্তের মতো তাকিয়ে ছিল নম্বরটার দিকে। দ্বিতীয় বার কল এল। রিসিভ করতেই ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়ল যুথিকা, শোনো এ বিয়ে করব না । কী বলছ এসব! মেয়েটাকে হঠাৎ যেন পাগল পাগল মনে হলো। এই মেয়ের অনেক কথা সে মন দিয়ে শুনেছে। কোনোদিন এমন ঝড় ওঠেনি। বুকের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা রাশি রাশি কথা জ্যোতির্মণ্ডল হয়ে ঘিরে থাকত।  শোনো ক্যাম্পাসে আজ তোমার সঙ্গে কথা আছে।  কিন্তু আমার তো আজ প্র্যাকটিস। অনূর্ধ্ব কুড়ির জন্য ট্রায়াল। একটা দিন আমার জন্য নষ্ট করো তুষার। একটা দিন আমি তোমার মুখোমুখি হতে চাই।  ক্যাম্পাসের পাশে একটা বড় পুকুর। তার পাশে একটা পুরানো সোনাঝুরি গাছ। এখানে সাধারনত প্রেমিক-প্রেমিকারা বসে। কিন্তু তারা এখনো কারো চোখে তেমন প্রেমিক-প্রেমিকা হয়ে ওঠেনি। হঠাৎ সেখানে নিয়ে গেল যুথিকা। সোনাঝুরির গোড়ায় তাকে পাশে নিয়ে বসল। তুষার ঠিক বুঝতে পারছিল না কী হতে চলেছে। অথচ বুঝতে পারছিল যুথিকার বুকের ভিতর মোমের মতো গলছে। হঠাৎ সেই গলনটা সম্পূর্ণ হলে যুথিকা যেন অগ্নিশূন্য হল। দুচোখ ঝেঁপে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি ধারা কে দুহাতের চেটোয় সে কিছুতেই সামলাতে পারছিল না। তার হাত চেপে ধরল তুষার, কী হলো বলো। আমি তোমার জন্য সারা জীবন অপেক্ষা করতে চাই, বলো সে অধিকার কি দেবে?  কী বলছ এসব! একজন ভালো পাত্রের সন্ধান পেয়েছে আমার বাবা। তার সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু তুমি কি জানো না আমি খারাপ পাত্র চাই। তোমার মতো খারাপ। খেলা ছাড়া যার জীবনে কোনো প্যাশন নেই, যে শুধু উড়তে জানে, কোথাও বাঁধা পড়তে জানে না। কী বলছ এসব! কী আছে আমার! কয়েকজন ভাড়াটের মাইনে আর বাবার জমিয়ে যাওয়া সামান্য টাকা। খেলে এখনো একটা চাকরি পেলাম না। মুখ তুলে তাকাল যুথিকা। দুচোখের কোণে মুক্তোর বিন্দু। তবু সেই মুক্তো ছড়ানো জমিনে যেন ধুধু মরুভূমি। তপ্ত বালুকা। দুচোখ মুছে ঘনিয়ে এল তুষারের মুখে। চেপে ধরল দুই হাতে। যেন অনন্তকালের জন্য তাকে শুষে নিতে চায়। দীর্ঘ চুম্বন শেষ করে যুথিকা তাকাল, এখন শুধু আর বন্ধু নয়, আমি পুরোপুরি তোমার। তুমি এবার থেকে নিশ্চিন্তে খেলো। চুটিয়ে খেলছিল তুষার। অনূর্ধ্ব কুড়িতে চান্স পেল আচমকা। যুথিকাকে ফোনে জানাতে আনন্দে কেঁদে ফেলল, আমি জানতাম তুমি পাবে। মোবাইলটা পকেটে পুরে পড়ন্ত বিকেলে খেলার মাঠে অনেকক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল তুষার। মনে হলো তখনও যুথিকা কাঁদছে। একটা মেয়ে ঊষর পার্বত্য দেশ ছেড়ে তীব্র স্রোতে সমভূমিতে নামছে। ইতিমধ্যে মল্লিকা এল তাদের বাড়িতে। খবরটা যুথিকাকে জানাতে গিয়ে পরপর সুইচড অফ। তার বুকের ভেতরটা ধক করে উঠল। নেটেও ছিল না যুথিকা। সারাদিন উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করল তুষার। পেল না। যুথিকার কোনো বান্ধবীর নম্বর তার কাছে ছিল না। তুষার মরিয়া হয়ে ক্লাসের কয়েকজন ছেলের কাছে ফোন করল। কেউ জবাব দিতে পারল না। ভোর রাতে একটা এসএমএস এল, আমি বাঁচতে পারলাম না। তুষার পাশের বাড়ির এক বন্ধুর বাইকটা নিয়ে সেই ভোরে বেরিয়ে পড়েছিল। তখন উঠানে লাশ। যুথিকার দুচোখে তুলসী। কাঁপতে কাঁপতে ভেঙে পড়েছিল তুষার। পাড়ার সবাই বলো-হরি দিয়ে লাশটা যখন ভ্যানে তুলল শক্ত হয়ে দাঁড়াল সে। এক বয়স্ক লোক পাশে দাঁড়িয়ে বলল, তোমার সঙ্গে পড়ত বুঝি? মেয়েটা জেদী। বাবার কথা শুনল না। মানুষটা চিন্তায় চিন্তায় স্ট্রোকে মারা গেল। পাথরের মতো দাঁড়িয়ে ছিল তুষার, কবে মারা গেলেন?  তিনদিন আগে। চমকে ওঠে তুষার। বাকরুদ্ধর মতো তাকিয়ে থাকে। মেয়েটা খাওয়া ছাড়ল। আজ রাতে ঘুমের বড়ি খেল। নেহাত পার্টি-পুলিশ নিজেদের লোক, তাই কাটাকাটি করতে হলো না। লাশটাকে নিয়ে ভ্যানটা যখন এগোল, মুহূর্তে মিলিয়ে গেল চোখের সামনে থেকে, স্থির থাকতে পারেনি তুষার। বাইকটা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াল। যুথিকা তো তার ওড়াটাই পছন্দ করত। উড়তে উড়তে বাড়ির কাছাকাছি আসতেই একটা লরির সঙ্গে অ্যাক্সিডেন্ট হলো। কিন্তু সে মরল না। বেঁচে গেল। অথচ সে তো মরতেই চেয়েছিল। লাঠি হাতে ঠাম্মা এসে দাঁড়ায়, মল্লিকাটা চলে যাচ্ছে। কদিন পরে ট্রান্সফার। তুষার অবোধের মতো তাকিয়ে থাকে। ঠাম্মা বলে, মেয়েটা না থাকলে আমি একা কিছু করতে পারতাম না। আয়া-মেয়েটা সুবিধার নয় বলে ওই ছাড়িয়ে দিল। এখন আমি হঠাৎ করে কী করি বল তো?   ওকে তুই আটকা তুষার। ঘোরের মধ্যে একদিন তুই ওকে বুকে টেনেছিস, আমি সাক্ষী…। ঝড়ের মতো ঘরে ঢোকে মল্লিকা। ঠাম্মার হাত দুটো চেপে ধরে, প্লিজ ঠাম্মা, প্লিজ, একটু বাইরে চলো। তুষার যে কী করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। অথচ মেয়েটা তার সামনে থেকে তার ঠাম্মাকে কীভাবে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এত জোর পেল কোথায়! একে সত্যি ঘোরের মধ্যে টেনেছিল সে! তুষারের সারা শরীরে আবার যন্ত্রণাটা ছড়িয়ে পড়ে। সে চেয়েছিল শরীর যায় যাক, মনটা যেন থাকে। যুথিকার জন্য।  দ্রাম শব্দে দরজাটা বন্ধ হলো। সাজগোজ করে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মল্লিকা। তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজেই বলে, আমাকে ব্যাঙ্গালোর চলে যেতে হবে। অর্ডার আসতে বেশি দেরি নেই। তখন কিন্তু ভালো থাকবেন, আর ঠাম্মা কী বলেছে ভুলে যাবেন। আপনি যাকে ভালবাসতেন তার খোঁজ নিয়েছি। যুথিকা। সবাই তার মতো ভালবাসতে পারে না। দরজাটা খুলে ফেলে মেয়েটা। তুষার অস্ফুটে কিছু বলতে চায়, পারে না। মেয়েটা আবার ঘুরে দাঁড়ায়। কাছে এগিয়ে আসে, কিছু বলবেন?  তুষার মাথা নাড়ে, না। মল্লিকা তার মাথায় হাত রাখে, এই তিন মাস তো কন্টিনিউ আপনাকে ছুঁয়েছি, তাই লজ্জা নেই। কিন্তু এটা তো সত্যি, আমি আর যূথিকা এক নই। আমার নিজস্ব গন্ধ আছে। যদি সেই গন্ধে ঢুকতে চান আপনাকে ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে যেতেও রাজি। কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলে আর অপেক্ষা করে না মল্লিকা। খোলা দরজা দিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায়। তুষারের মনে হয় যন্ত্রণাটা এবার তাকে অবশ করুক। অনেক… অনেক দিনের মতো।